মো:আনোয়ার হোসাইন, কুমিল্লা:
কুমিল্লার মুরাদনগরে মাত্র ৭০ টাকার জন্য রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে সাইদুল ইসলাম (১৪) নামের এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করেন তাঁরই প্রতিবেশী ঘাতক লিমন (১৯)। নিহত সাইদুল উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামের সাদেক মিয়ার ছেলে। ঘাতক লিমন একই এলাকার আব্দুল করিম মিয়ার ছেলে।
সোমবার (৪ নভেম্বর) নিহতের অভিভাবক হিসেবে ( নানা) আঃ মালেক বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ দিন পূর্বে নিহত সাইদুল ইসলাম পাশের বাড়ির লিমনের কাছ থেকে ৭০ টাকা হাওলাত নেয়। সে খুবই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। টাকা দিতে না পারায় বাড়ীর সামনে সড়ক থেকে সাইদুলকে মামলার প্রধান আসামী লিমন (১৯) লিমন ধরে বাড়িতে নিয়ে যায়। এসময় উপস্থিত ছিলেন লিমনের জেঠা মমিনুল (৪৫) ও মজিবুর (৫০)। বাড়ির ভীতরে নিয়ে তাকে মাথায় এলোপাতাড়ি পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে রাস্তায় ফেলে রাখেন। সেখান থেকে স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা হাসপাতালে নিয়ে যায়। ৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইদুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের নানা আঃ মালেক অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, ” আমার মেয়ের ঘরের নাতি সাইদুল। সে জন্মের ৩ দিনের মাথায় তাঁর ‘মা’ মারা যায়। তাকে আমরাই এ পর্যন্ত ভরনপোষণ দিয়ে বড় করেছি। তার বাবা দিনমজুর। দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসার নিয়ে খুব কষ্টে চলে।সাইদুল মুরাদনগর কনিকা টেইলার্সে চাকুরী করত। ৩১ অক্টোবর টেইলার্সের দোকান থেকে ঘোড়াশাল নীজ বাড়িতে যায়। বাড়ি থেকে আসার সময় রাস্তার ওপর থেকে তাঁকে ৭০ টাকা পাওনা আদায়ের জন্য টেনে হেঁচড়ে তুলে নেয় লিমন। এসময় পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো লিমনের দুই জেঠা। তাঁদের সামনেই আমার ‘মা’ মরা নাতিকে পিটিয়ে মাথা থেতলে রাস্তায় ফেলে রাখেন। খবর পেয়ে আমরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাইদুল মারা যায়। আমি এই খুনিদের উপর্যুক্ত বিচার চাই। মাত্র ৭০টাকার জন্য বাচ্চাটাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে ঘাতকরা। কোনো ওপর মহলের হস্তক্ষেপ ও দলীয় প্রভাব যেন বিচারকে প্রভাবিত করতে না পারে সেজন্য আমি মাননীয় উপদেষ্টামন্ডলীর কাছে এই আকুতি জানাই “।
এলাকাবাসী জানায়, সাইদুল খুবই ভালো ছেলে। ছোট থেকে অনেক অভাব অনটনের মধ্যে বেড়ে উঠেছে । সে মুরাদনগর টেইলার্সের দোকানে থাকত। মাত্র ৭০ টাকার জন্য ছেলেটিকে পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখেন। আমরা এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।
মুরাদনগর থানার ওসি মোঃ মাহবুবুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়ে মামলা আমলে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।