সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার পায়তারা করছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল

ডেস্ক নিউজ :

গত ০৫ নভেম্বর ( মঙ্গলবার)  বিকেল সাড়ে ৫ ঘটিকায় ওসমান আলী নামক একজন ব্যক্তির ফেইসবুক পোষ্টকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগরীর টেরীবাজার এলাকার হাজারী লেনে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পোষ্টটি কেন্দ্র করে ওই এলাকার বেশ কিছু দুষ্কৃতিকারীরা হাজারী লেনে ওসমান আলী ও তার ভাই’কে হত্যা এবং দোকান জ্বালিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে জড়ো হয়।

যৌথবাহিনী’কে খবর দেওয়া হলে পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং বিজিবি সদস্যদের ০৬টি টহল দল উক্ত এলাকায় পৌঁছায়। বিশৃঙ্খলাকারীদের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় এবং মব জাস্টিস রোধে যৌথবাহিনী ওসমান আলী ও তার ভাই’কে উদ্ধার করে এবং উত্তেজিত জনতাকে আশ্বস্ত করে যে দেশের প্রচলিত আইনে যদি কেউ অপরাধী প্রমানিত হয় তার শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এপর্যায়ে উগ্র বিশৃঙ্খলাকারীরা আক্রমনাত্বক হয়ে ওঠে।

ওসমান আলী এবং তার ভাই’কে হত্যার পরিকল্পনা নস্যাৎ হওয়ায় উগ্র জনতা যৌথবাহিনীর উপর আক্রমণ চালায়। ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করলে সেনাবাহিনীর ০৩ জন সদস্যসহ বেশ কিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়। সেনাবাহিনীর ০৩ জন সদস্য’কে পরবর্তীতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল চট্টগ্রামে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এছাড়াও দুষ্কৃতিকারীরা এলাকার বিভিন্ন ভবনের ছাদ এবং বারান্দা থেকে এসিড সদৃশ বস্তু, কাঁচের বোতল ও ভাঙ্গা কাঁচের টুকরা ছুড়ে মারতে শুরু করলে সেনাবাহিনীর ০১ জন সদস্যের হাত, পা এবং পিঠের কিছু অংশ পুড়ে যায়। এপর্যন্ত ০৪ জন সেনা সদস্যসহ বেশ কিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।

উদ্ধার অভিযানের পর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা রোধে পুনরায় যৌথবাহিনীর ১০টি টহল হাজারী লেন, টেরী বাজার এলাকায় গমন করে। আক্রমনের জের ধরে পুনরায় যৌথবাহিনীর উপর এসিড সদৃশ বস্তু ছোড়া শুরু করে দুষ্কৃতিকারীরা। এসময় যৌথবাহিনী ০৬ জন দুষ্কৃতিকারী’কে আটক করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত সদস্য এবং গোয়েন্দা মাঠকর্মীদের নিকট হতে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য যৌথবাহিনীর কাছে আসে।

চট্টগ্রামে পরিকল্পিতভাবে মন্দিরে হামলা চালিয়ে মূর্তি ভাংচুরের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চলছে বলে জানতে পারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। বিশেষ করে ০৫ আগষ্টের পর পালিয়ে থাকা নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কিছু নেতার নির্দেশে পাঞ্জাবী ও টুপি পরিহিত অবস্থায় ছদ্মবেশে মন্দিরে হামলা এবং মূর্তি ভাঙ্গার এই পরিকল্পনা করা হয়েছে। পূর্ব পরিকল্পিত এই ঘটনাটির পিছনে কারিগর হিসেবে সঞ্জিব বিশ্বাস সাজু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, ৩২ নং আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড যুবলীগ এবং বলরাম চক্রবর্তী বলয়, সাবেক কাউন্সিলর জহর লাল হাজারীর পিএস এর নাম উঠে আসে। এছাড়াও ছাত্র আন্দোলন বিরোধী কক্সবাজার শহর আওয়ামীলীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক দীপক দাস যিনি বর্তমানে চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন, তার ইশারায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উস্কে দিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে দুষ্কৃতিকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পরিকল্পিতভাবে আইন শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর হাজারী গলিসহ নগরীর অন্যান্য এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করেছে যৌথবাহিনী।