ঢাকা ব্যুরো:
স্থানীয় প্রশাসনকে নদী দূষণ ও অবৈধ দখলদারিত্ব থেকে বাঁচাতে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। অতিথি হিসেবে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ নদীবিধৌত দেশ, এ দেশের মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নদ-নদীর উপর নির্ভরশীল। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য উন্নয়নের নামে নদ-নদী খালবিল দখল করা হয়েছে। নদীকে বাঁচাতে হলে দূষণ ও অবৈধ দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করতে হবে। নদী বাঁচানোর এখনই উপযুক্ত সময়। অন্য সময় করতে হলে স্বার্থের সংঘাত শুরু হবে।
তিনি মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর পানি ভবনে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশের নদ-নদী সংখ্যা নির্ধারণ বিষয়ক অবহিতকরণ সেমিনারে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য কালে এসব কথা বলেন।
নদী বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও দপ্তর সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের উপর গুরুত্বারোপ করে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, এই শীত মৌসুমেই বুড়িগঙ্গা নদী দূষণমুক্ত করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ করবে। নদী তীরবর্তী সকল অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলতে হবে। স্থানীয় প্রশাসনকে নদ-নদী খালবিলের দূষণ ও অবৈধ দখলদারিত্ব থেকে বাঁচাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। উচ্ছেদ করার পর আবারো দখল হচ্ছে। নদী হতে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। নদী রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনকে আরো বেশি দায়িত্ব নিতে হবে। অপরিকল্পিতভাবে তৈরি নগরীর ড্রেনগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে অভিমত ব্যক্ত করেন উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা আরও বলেন, উন্নয়নের নামে খালগুলো ভরাট করে ড্রেন বানানো হয়েছে। উত্তরবঙ্গের নদীগুলো দখল হয়ে গেছে। অসম্ভব রকমের নদী দূষণ হয়েছে। বুড়িগঙ্গা নদীসহ অন্যান্য বড় বড় নদী নাব্যতা হারিয়েছে। পরিকল্পিত ড্রেজিং এর মাধ্যমে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি। এ লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে কাজ করছে। হারিয়ে যাওয়া শৈশবের সেই অতি পরিচিত মৃতপ্রায় নদীগুলোকে বাঁচাতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা নিতে হবে। এ সময় খাল আর নদীকে পৃথকভাবে সংজ্ঞায়িত করার উপর গুরুত্বারোপ করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসানের সভাপতিত্বে সেমিনারে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সম্মানিত অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন। এছাড়াও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আমিরুল হক ভূঞাসহ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকগণ ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে উপস্থিত ছিলেন।