মহালছড়ি ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা বাঁশের বেড়া আর টিনের ছাউনি: কক্ষ সংকটে চলে পাঠদান

মো:কাউছারুল ইসলাম, মহালছড়ি:

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা মহালছড়ি উপজেলার অন্যতম দ্বীনি শিক্ষাকেন্দ্র মহালছড়ি ইসলামি দাখিল মাদরাসা সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। মহালছড়ি ইসলামি দাখিল মাদ্রাসা ইবতেদায়ী শাখা ১৯৮৫ আস দাখিল শাখা ২০০৪ সালে চালু হয়।২০২১সালে একাডেমি স্বীকৃতি পান। শ্রেণিকক্ষ সংকটে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদানও। বাঁশের বেড়া আর টিনের চাউনি দিয়ে নির্মিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতিষ্ঠার ৪৯ বছরেও সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাদরাসাটির প্রত্যেকটি শ্রেণিকক্ষই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। শ্রেণিকক্ষ সংকটে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান চলছে বারান্দায়। নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে অফিস কক্ষসহ ১০টি কক্ষের প্রয়োজন। কিন্তু জরাজীর্ণ ঘরটিতে আছে ৭টি কক্ষ। যার কারণে ২টি শ্রেণি কার্যক্রম মাদ্রাসার বারান্দায় পরিচালনা করতে হচ্ছে। সীমানা প্রাচীর না থাকায় মাদরাসাটির নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হচ্ছে এবং মাদ্রাসার শ্রেণিকক্ষের বিভিন্ন জিনিস চুরি হয় প্রতিনিয়ত।মাদরাসা সুপার মাওলানা মো: আজিজুর রহমান জানান, প্রতিষ্ঠা থেকে মাদরাসাটি ১ম থেকে ১০শ্রেণি পর্যন্ত শ্রেণি কার্যক্রম চলছে। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধিনে থেকে জেডিসি ও দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে এ মাদরাসার শিক্ষার্থীরা।

বর্তমানে এ মাদরাসায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে ১২জন শিক্ষক। তিন হাজার টাকার নামেমাত্র মাসিক সম্মানী নিয়ে শিক্ষকরা চাকুরি করছেন। এত অল্প বেতন তাও আবার ৭/৮ মাস সর্বদা বেতন বকেয়া পড়ে থাকে । এর ফলে শিক্ষকরাও রয়েছেন আর্থিক অনটনে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে মেলেনি প্রয়োজনীয় সরকারি অনুদান। ছাত্র-ছাত্রীদের দেয়া মাসিক ফি থেকেই শিক্ষকদের বেতন চলে। কিন্তু এলাকাটি দরিদ্রপ্রবণ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাসিক ফি নিয়মিত পাওয়া যাচ্ছে না।
এছাড়াও মাদ্রাসায় নেই কোন গ্রন্থাগার, কম্পিউটার ল্যাব, ওয়াশ ব্লক, নেই স্বচ্ছ পানির ব্যবস্থা। এমনকি ছাত্র ছাত্রী ও শিক্ষকগণ প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের জন্য যেতে হয় নিজ গৃহে। কোন প্রকার নাগরিক সুযোগ সুবিধা ব্যবস্থা না থাকায় মাদ্রাসা পরিচালনায় সমস্যা দেখা যাচ্ছে।শ্রেণিকক্ষ সংকট ও বেহাল অবস্থার কারণে অভিভাবকরা এখন আর তাদের সন্তানদের এখানে ভর্তি করাতে চান না বলে জানালেন মহালছড়ি ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মোহাম্মদ হাসান । তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসার দুটি দু’চালা টিনের ঘর জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে চরম বেকায়দায় আছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান ও অফিসের কার্যক্রম। বর্ষাকালে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে আতঙ্কে থাকি। নতুন একটি ভবন নির্মাণের জন্য বহুবার সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেছি। কিন্তু ভবন নির্মাণে আজও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একটি পাকা ভবন নির্মাণের জোর দাবি জানাচ্ছি।’