টেকনাফে বিজিবির পৃথক অভিযান ১৭৯ভরি স্বর্ণ, অস্ত্র নগদ টাকা ও ইয়াবা উদ্ধার: আটক-৭

এম এ হাসান,টেকনাফ:

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় বিজিবি পৃথক অভিযান চালিয়ে ১৭৯ভরি স্বর্ণ, অস্ত্র, নগদ টাকা ও ইয়াবাসহ রোহিঙ্গাসহ ৭জনকে করেছে বিজিবি।

২৭ জানুয়ারি (সোমবার) বিকালে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২বিজিবি) অধিনায়ক লেঃ কর্নেল আশিকুর রহমান গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৬ জানুয়ারি আনু: ২৩১০ ঘটিকায় টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর একটি চৌকশ আভিযানিক দল টেকনাফ পৌরসভার কেকে পাড়ায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে কতিপয় মায়ানমারের নাগরিক অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের একটি আবাসিক ভবনে অবস্থান করছে। উক্ত ভবনে অবস্থানরত মায়ানমারের ০২ জন নাগরিকের (মহিলা) কাছ থেকে বেআইনি ভাবে দুটি পোটলায় রক্ষিত ১৭৯ ভরি ৪.৩ রতি স্বর্ণালংকার (২১ ক্যারেট-৬৬ ভরি ২ আনা ১ রতি, ২২ ক্যারেট-১০৪ ভরি ৬ আনা ৫.৩ রতি এবং ২৪ ক্যারেট-৮ ভরি ৭ আনা ৪ রতি) এবং বাংলাদেশী নগদ ৪,০৪,১০০/- টাকা উদ্ধার করা হয়। অভিযান শেষে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে স্বর্ণালংকারসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। আটককৃতরা হলেন, মিয়ানমারের মংডু শহরের খালেদা (৪৫) ও শফিক আহম্মেদ। জব্দকৃত সামগ্রীসমূহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে একইদিনে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উনচিপ্রাং হতে কুতুপালংগামী একটি সিএনজির ০৩ জন আরোহীকে তল্লাশী করে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। সন্দেহজনক আরোহীদেরকে চেকপোস্টে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশী করে দুই জনের কোমরে সুকৌশলে লুকিয়ে রাখা ২টি পুরাতন বিদেশী পিস্তল ০৪ রাউন্ড গুলিসহ উদ্ধার করে। আটককৃত আসামী এবং তাদের নিকট হতে জব্দকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ প্রচলিত অস্ত্র মামলায় টেকনাফ মডেল থানার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন, কুতুপালং ক্যাম্পের উঁচুং যোহার পুত্র আনোয়ার শাহ (১৮), দ্বীন মোহাম্মদ পুত্র মোঃ শরিফ (১৮ ও ফকির আহম্মদ পুত্র মোঃ হাসিম (২০)।

অপরদিকে : ২৭ জানুয়ারি টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ টেকনাফ-কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে যানবাহনযোগে মাদকদ্রব্য পাচার হতে পারে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ দমদমিয়া এবং হোয়াইক্যং চেকপোস্টে যানবাহন নজরদারী ও তল্লাশী কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়। আনুমানিক ০৯১০ ঘটিকায় হ্নীলা হতে কুতুপালংগামী একটি সিএনজি হোয়াইক্যং চেকপোস্টের নিকট আসলে কর্তব্যরত বিজিবির সদস্যরা সিএনজিটি তল্লাশী করে একজন সন্দেহভাজন আরোহীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশী করা হয়। পরবর্তীতে তল্লাশীর এক পর্যায়ে উক্ত ব্যক্তির শরীরে সুকৌশলে লুকিয়ে রাখা ২,০৬৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। আটককৃত আসামি হলেন, হ্নীলা নাটমুরা পাড়ার আমির হোছাইন এর পুত্র শাহাব উদ্দিন (৩৫)।

একইদিনে হোয়াইক্যং বিওপির দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-১৮ হতে আনুমানিক ০১ কিঃ মিঃ উত্তর-পূর্ব দিকে হোয়াইক্যং বিওপি’র একটি বিশেষ টহলদল কেরেঙ্গাঘোনা এলাকায় গমন করতঃ কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে। টহল পরিচালনার এক পর্যায়ে আনুমানিক ১২০০ ঘটিকায় একজন ব্যক্তিকে একটি পোটলা হাতে নিয়ে নাফ নদী পার হয়ে বেড়িবাঁধের দিকে আসতে দেখে। উক্ত ব্যক্তির গতিবিধি সন্দেহজনক পরিলক্ষিত হওয়ায় টহলদল তাকে ধাওয়া করলে দূর হতে বিজিবি’র উপস্থিতি টের পাওয়া মাত্রই উক্ত চোরাকারবারীর হাতে থাকা পোটলাটি ফেলে দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে টহলদল তাকে চারদিক থেকে ঘেরাও করতঃ আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে পোটলাটির ভিতর (বিশেষভাবে মোড়কজাত) হতে ৫০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। ধৃত আসামী হোয়াইক্যং ইউপির কেরেঙ্গাঘোনার আলী আকবরের পুত্র নুরুল বশর (২৪।

অধিনায়ক আরও বলেন, টেকনাফের জনমনে সস্তি ও শান্তি বজায় রাখতে সীমান্তবর্তী এলাকায় অপরাধ দমনসহ মাদক ও চোরাচালান বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।