# ‘আমি জজ এর বাপ: সরকারি কৌশলী ইসহাক
কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণ এলএ শাখায় অনিয়ম-দুর্নীতি নতুন নয়। সংশ্লিষ্ট কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা -কর্মচারীদের জাল- জালিয়াতির মাধ্যমে প্রকৃত জমির মালিককে বঞ্চিত করে অধিগ্রহণের টাকা তুলে দিয়েছেন
নির্দিষ্ট চক্রের হাতে।বিনিময় জড়িতরাও পেয়েছেন মোটা অংকের টাকা। দুদক কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এবার প্রকৃত দলিল মালিককে কোন যুক্তিক কারন ছাড়াই নিঃস্বত্ববান ঘোষণা করার ঘটনাও ঘটেছে এ অধিগ্রহণ শাখায়। বিষয়টি নিয়ে সর্বত্রই তোলপাড় চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে,কক্সবাজারে এল এ মামলায় একই খতিয়ানের ৩ অংশীদারের ওয়ারিশী বিরোধীয় জমির মালিকানা নিস্পত্তির সুবিধার্থে একাধিকবার শুনানির পর কোন সুরাহা না হওয়ায় এডিসি (রাজস্ব)কতৃর্ক আদালতের সরকারি কৌশলীর কাছে আইনগত মতামত চেয়ে চিঠি পাঠায়।
মালিকানা নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট কৌশলীর কাছে আরএস খতিয়ানের অংশ লিপি ও দখল বিষয়য়ক দু’টির মধ্যে কোনটি অগ্রাধিকার পাবে তা জানতে চাওয়া হয়।
কিন্তু কৌশলী মোঃ ইসহাক রীতিমতো নিয়মের বাইরে গিয়ে একজনের পক্ষ নিয়ে আইন পরিপন্থী এবং পক্ষপাত দুষ্ট প্রতিবেদন দাখিল করে দুটি পক্ষকে নিঃস্বত্ববান ঘোষণা করেছেন।আরএস খতিয়ানের দুজন মালিককে
নিঃস্বত্ববান দাবি করে তাদের জমির ভূয়া মালিক প্রতিপক্ষ বলে উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন
সরকারি কৌশলী মোঃ ইসহাক। এতে করে প্রকৃত মালিকরা জমির মালিকানা হারানোর শঙ্কায় রয়েছে।
ভুক্তভোগী মৃত ইব্রাহিম ও রহিমার ওয়ারিশরা জানান, সরকারি কৌশলী মোঃ ইসহাক অতি সুকৌশলে মন্তব্য প্রতিবেদনে তাদের স্বত্ব কে তামাদির অপচেষ্টা করেছেন।প্রতিবেদনে তিনি বন্ধকি সম্পত্তি কে বিক্রিত সম্পত্তি উল্লেখ করে এক তরফা মতামত দিয়ে প্রতিপক্ষকে মামলায় জেতার পথ সুগম করেছেন।
অভিযোগ উঠেছে,কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা মৌজার আর এস ৩১৯ খতিয়ানের আর এস দাগ ৬০৭৬,৬০৭৯,৬৪৬৮ ও ৬৪৭৪ এর ৪ টি দাগের ৩ জন ওয়ারিশের স্বত্ববানদের মধ্যে রায়তী মালিক মৃত ইব্রাহিম ও রহিমা গংদের স্বত্বকে সম্পুর্ণ অবঙ্গা করার নেপথ্যে সরকারি কৌশলী প্ররোচিত হয়েই এমন বেফাস মন্তব্য করেছেন দাবী রায়তী খতিয়ানের মালিক মৃত ইব্রাহিমের ওয়ারিশ আবু শমা ও আবু ছৈয়দের পুত্রদ্বয় সুলতান আহমদ, ইব্রাহিম খলিল ও মুসা খলিল অপর জন রহিমার ওয়ারিশ মুফিজুর রহমানের।
তাদের দখলীয় আর এস ৩১৯ খতিয়ানের ১ একর ৭৩ শতক জমির মধ্যে রহিমা খাতুন ও ইব্রাহিম সমান ৪ আনা করে ৮ আনা অংশীদার। এর মধ্যে ইব্রাহিম অর্থের প্রয়োজনে আর এস ৩১৯ খতিয়ানের মালিক রহিমা খাতুনের স্বামী আবদুল লতিফ কে ১৯৩২ সালে রেজিঃকৃত ১৬৬৮ নং কবলামূলে রেহেনা (কট)বন্ধক দেন ।
তৎকালীন সময়ের বন্ধকী জমি নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে উদ্ধার করতে না পারলে সেই বন্ধকী দলিল নিলামে তুলে বিক্রি করা হবে মর্মে দু,পক্ষ কতৃর্ক উক্ত দলিলে উল্লেখ করা হয়।
ইব্রাহিমের ওয়ারিশ দ্বয় আরও জানান বন্ধকী জমি আমার বড় দাদা উদ্ধার না করে থাকলেও এখনো আবদুল লতিফের নামেই তা রয়েগেছে।কিন্তু সরকারি এ কৌশলী বন্ধকীকে বিক্রিত উল্লেখ করে কথিত খরিতদারদের পক্ষে সৃজিত বি এস খতিয়ানের বাহানায় বর্তমানে আমাদের স্হিত দখলকে তিনি বৈসাদৃশ্য হিসাবে দেখিয়েছেন।
তারা আরও জানান,কথিত মালিক আবদুল করিমের ওয়ারিশ গং ইব্রাহিম কতৃর্ক (কট) বন্ধক নেয়া আবদুল লতিফ কিংবা তার ওয়ারিশদের কারোও কাছ থেকে নিলামে ক্রয় করেছে এমন কোন দলিলাদি বা প্রমান সংশ্লিষ্টদের কাছে উপস্থাপনে ব্যর্থ হয়েছেন। বংশ পরম্পরায় এ জমির ভোগ দখলদার ইব্রাহিমের ওয়ারিশ গং হলেও এর পক্ষে নানা দলিল এবং তথ্য প্রমান ঐ কৌশলীকে প্রদর্শনের চেষ্টা করা হলেও তিনি এসবের ধার ধারার পাত্র নয়,বরং আবদুল করিমের ওয়ারিশ গংদের কথিত কাগজ পত্রকেই আদালতের শুনানিতে অগ্রভাগে রেখে একতরফা রায়(মতামত) দিয়েছেন তিনি।
জানাগেছে আর এস ৩১৯ এর বিপরীতে এল এ মামলা নং ০৪/২০১৬-১৭ ক্ষতি পূরণ মামলা নং ১০৭৬/২০২১ এর দলিল ও সৃজিত বি এস খতিয়ানের বিরুদ্ধে ইব্রাহিম ও রহিমার ওয়ারিশদের দায়ের করা মামলা বর্তমানে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। এ মামলার রায় ইব্রাহিম ও রহিমার ওয়ারিশদের পক্ষে যাওয়ার সম্ভাবনাও উজ্জ্বল। আর এস খতিয়ান ৩১৯ এ রায়তি মালিক মোঃ ইসমাইল, রহিমা খাতুন ও ইব্রাহিমের মোট জমি ৩ দশমিক ২০ শতক।তৎমধ্যে ১ দশমিক ৭৮ শতক জমি ইতিমধ্যে সরকার কর্তৃক রেললাইন সম্প্রসারণে অধিগ্রহণ করা হয়।তাদের দাবী সংশ্লিষ্ট কৌশলী আবদুল করিমের ওয়ারিশদেরকে ইব্রাহিম ও রহিমার জমির ক্রয়কৃত স্বত্ববান দেখালেও মূলত আবদুল করিম গং ইব্রাহিম কিংবা (কট)বন্ধক নেয়া আবদুল লতিফের কাছথেকে এরুপ বিক্রিত জমির কোন প্রকার দলিলাদি আদালতে কিংবা ঐ কৌশলীর কাছে প্রদর্শন করতে পারেননি।তার স্বত্বের পক্ষে এসব প্রমানাদি না পেয়ে খোদ কৌশললী থ বনে গেলেও এখন মামলার শেষ দিকে এসে আষাঢ়ে গল্প জুড়ে দিয়ে প্রকৃত ওয়ারিশী স্বত্ববান ইব্রাহিম ও রহিমা গং কে ন্যায্য হিংসা থেকে বঞ্চিত করতে সরকারি কৌশলী এমন অপকৌশলের মতামত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)র কাছে প্রেরণ করেছেন বলে অভিযোগ ইব্রাহীম ও রহিমা গংদের।
জানতে চাইলে মূল দলিল এর মালিক কে নিঃস্বত্ববান উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি স্বীকার করেছেন কৌশলী মোঃ ইসহাক।তিনি বলেন, আমার কাছে যেটি যুক্তিক মনে হয়েছে আমি তাই করেছি।
মুল দলিলের মালিক নিঃস্বত্ববান হয় এবং প্রতিপক্ষ কি মূলে ওই জমির মালিক হয় এমন প্রশ্নের জবাবে কৌশলী মোঃ ইসহাক উত্তেজিত হয়ে বলেন, আমি জজের বাপ তাই যা ইচ্ছা তাই করতে পারি। আপনাদের ক্ষমতা থাকলে আমার বিরুদ্ধে কিছু করে দেখান বলে মোবাইলের লাইন বিছিন্ন করে দেন।
এ বিষয়ে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রানালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) বিকাশ কুমার সাহা জানান,সরকারি কৌশলী কারো পক্ষে একতরফা সিদ্ধান্ত দেয়া সম্পূর্ণ নীতি বহির্ভূত।প্রকৃত স্বত্ববানরাই ক্ষতি পূরণ পাওয়ার যোগ্য।কেউ বঙ্চিত হওয়ার অভিযোগ পেলে তদন্তের মাধ্যমে প্রতিকারের ব্যবস্হা নেব।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ জানান এমন মতামত প্রত্যাশার নয়।জমির সব মালিকদের প্রমানাদি বিবেচনায় নিয়ে একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।তিনি জানান,সরকার ও চাই না জমির প্রকৃত মালিকরা ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হউক।
Discussion about this post