বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং দি ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর বলেছেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের প্রকৌশলী সমাজেরও অবদান রয়েছে। চুেেয়টও অহংকার করার মতো দুজন শহিদ ছাত্রকে পেয়েছে। যারা বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে দেশের মুক্তির জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাধীনতার মুক্তি এনে দেওয়ার পরে পরবর্তীতে দেশ শাসন করতে গিয়ে অর্থনৈতিক মুক্তির রূপরেখাও তৈরি করে দিয়েছিলেন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাধ্যমে আজকে আমরা বিশ্বের ৩২তম পারমাণবিক শক্তির সদস্য হয়েছি। বর্তমানে দেশ শতভাগ বিদ্যুতায়িত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর রক্ত সেটা সফল হতে দেয়নি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি।” তিনি আরও বলেন, “দেশের উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রকৌশলী সমাজ অবদান রাখছেন। আমরা এই উন্নয়নের গর্বিত অংশীদার। আগামি দিনেও সারাবিশ্বে নেতৃত্ব দিতে আমরা প্রস্তুত। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের সুযোগ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে হবে। সেজন্য শেখ হাসিনার সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন। তিনি আজ ৩১শে মার্চ (বৃহস্পতিবার) ২০২২ খ্রি. বেলা ১২.৩০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ, চুয়েট-এর যৌথ আয়োজনে হাজার বছররের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত “মুজিববর্ষ কার্নিভাল-২০২২” এর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী এবং গেস্ট অব অনার ছিলেন চুয়েটের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
প্রধান বক্তা বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ও চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “বাঙালি বীরের জাতি। তাই একাত্তরে আমাদের দমিয়ে রাখা যায়নি। বাংলা নামক এই জনপদের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। এ জনপদে যারাই দেশ শাসন করেছে, তারাই আমাদের শোষণ করে গেছেন। কেবল আমাদের তিন হাজার বছরের ইতিহাসে মহাকালের মহানায়ক হয়ে বাঙালি জাতিকে মুক্তির দিশা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু শৈশব থেকেই মানবকল্যাণ ও জনকল্যাণমুখী কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি কারিগরি শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। সে লক্ষ্যেই প্রকৌশলীসমাজ বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন।”
গেস্ট অব অনার চুয়েটের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, “বঙ্গবন্ধুর সমগ্র জীবন জনগণের স্বার্থে সংগ্রাম ও ত্যাগে ভাস্মর। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনা তরুণ প্রজন্মের মাঝে জাগ্রত করতে হবে। যাতে সেই চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে উন্নত-সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কাজে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সহযোগিতা করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মুজিববর্ষ কার্নিভালের মাধ্যমে আমরা সেই প্রত্যাশাই রাখছি।
চুয়েটের মুজিববর্ষ বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. রনজিৎ কুমার সূত্রধরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সুনীল ধর, পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মইনুল ইসলাম, চুয়েট মুজিববর্ষ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি এবং তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল হাছান, জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী ও চুয়েট বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দীন আহাম্মদ। এতে আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য ও চুয়েট বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার দেব, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব আমিন মোহাম্মদ মুসা, স্টাফ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জনাব বিশ^জিৎ ভট্টাচার্য এবং শিক্ষার্থীদের পক্ষে ইমার হোসেন নিবর ও সাজিলা সুলতানা। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে আলোচনা সভা শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে চুয়েটে মুজিববর্ষ উদযাপনের সচিত্র প্রতিবেদন ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ, চুয়েট-এর কার্যক্রম নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি (২) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামসুল আরেফীন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম-সম্পাদক ড. স্বপন কুমার রায় এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রচার সম্পাদক জনাব নাহিদা সুলতানা।
এর আগে সকাল ১০.০০ ঘটিকায় মুজিববর্ষ কার্নিভাল উপলক্ষ্যে চুয়েটের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের নেতৃত্বে এক আনন্দ র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসে স্বাধীনতা চত্বর সংলগ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে চুয়েট পরিবার ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতৃবৃন্দ। দিনব্যাপী মুজিববর্ষ কার্নিভাল উপলক্ষ্যে গৃহীত অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিলো- বঙ্গবন্ধুর “অসমাপ্ত আত্মজীবনী”-এর উপর কুইজ প্রতিযোগিতা, “মুজিব শতবর্ষে বাংলাদেশ” শিরোনামে রচনা প্রতিযোগিতা, প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, আইডিয়া শো-কেসিং প্রতিযোগিতা, শিক্ষার্থী বনাম শিক্ষক ও কর্মকর্তা বনাম কর্মচারী প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আতশবাজি প্রভৃতি।
Discussion about this post