ধর্ষণ মামলায় জেন্ডার সমতা কেন ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। জেন্ডার সমতায় বলাৎকার, শিশুধর্ষণ, পুরুষ কর্তৃক পুরুষ, নারী কর্তৃক নারী ও হিজড়া কর্তৃক হিজড়া ধর্ষণের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। আদালত দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় কেন সংশোধন করা হবে না তাও জানতে চেয়েছেন।
আদালত আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলেন। রবিবার (১০ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল।
দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় শুধু পুরুষ দ্বারা নারী ধর্ষিত হলে শাস্তির বিধান আছে। কিন্তু সম্মতি ছাড়া নারীর দ্বারা নারী, নারীর দ্বারা পুরুষ, পুরুষ দ্বারা পুরুষ, হিজড়া দ্বারা হিজড়া এবং একজন ট্রান্সজেন্ডার (রূপান্তরিত লিঙ্গ) আরেক ট্রান্সজেন্ডার দ্বারা যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। এই বিষয়ে দণ্ডবিধিতে এ বিষয়টি নিয়ে কোন সংজ্ঞা বা বিধান উল্লেখ নেই।
মানবাধিকারকর্মী তাসমিয়া নূহাইয়া আহমেদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক ড. মাসুম বিল্লাহ ও সমাজকর্মী ড. সৌমেন ভৌমিকের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল গত বছর ১৪ জানুয়ারি দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় নারী ধর্ষণের অপরাধের পাশাপাশি পুরুষ ধর্ষণকেও অপরাধ হিসেবে সংযুক্ত করতে এই ধারাটির সংশোধন চেয়ে হাইকোর্টে সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। রিটে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) বিবাদী করা হয়।
রিটের বিষয়ে ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে ছেলেশিশু তথা পুরুষকে যৌন নির্যাতন ও বলাৎকারের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। কিন্তু এ ধরনের নির্যাতনকে ধর্ষণের অপরাধ হিসেবে বিচার করা যাচ্ছে না। তাই দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় সংশোধন এনে ‘নারী ধর্ষণ’ এর অপরাধের পাশাপাশি অপরাধ হিসেবে ‘পুরুষ ধর্ষণ’ বিষয়টিকে যুক্ত করার আবেদন করা হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেছিলেন, রিটে দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায়, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করে পুরুষ কর্তৃক শিশুদের বলাৎকারকে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করে এ ধরনের অপরাধ ধর্ষণের মতোই শাস্তিযোগ্য যাতে করা হয়। সেটি আমরা চাই।’
Discussion about this post