হযরত মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে আগামী ১৬ জুন ভারতীয় হাইকমিশনের অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি দেয়া হবে বলে জানায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম চরমোনাই। সেইসঙ্গে চলমান সংসদ অধিবেশনে নিন্দা প্রস্তাব আনার দাবি জানিয়েছে তিনি।
ভারতে বিজেপি মুখপাত্র কর্তৃক নবী মুহাম্মদ এবং আয়েশা (রা.) সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্যের প্রতিবাদে শুক্রবার (১০ জুন) বাদ জুমা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বিক্ষোভ মিছিলে মাওলানা ইশহাকের নেতৃত্বে খেলাফত মজলিশ, ইসলাম ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশ, পল্টন সেগুন বাগিচা ইমাম খতিব পরিষদ, দাবালয় শিল্পগোষ্ঠী সহ বেশ কয়েকটি সমমনা দল নিজস্ব ব্যানারে অংশ নিয়েছে। এসময় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলমসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভ চলাকালীন সংগঠনের কর্মী ও অংশগ্রহণকারীরা দৈনিক বাংলা মোড়, পল্টন মোড়, বিজয়নগর মোড়ে অবস্থান নেয়।
ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম চরমোনাই বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতার পাগল। ক্ষমতার নেশায় ভারতের বিরুদ্ধে আপনারা নিন্দা প্রস্তাব আনছেন না। আপনারা যতোই ভাবেন মোদি আপনাদের ক্ষমতার গদি রক্ষা করবে কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ আপনাদের ক্ষমতায় রাখবে না। চলতি জাতীয় সংসদের অধিবেশন থেকে যদি এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় নিন্দা প্রস্তাব পাস করা না হয়, ভারতীয় হাই কমিশনারকে যদি ডেকে নিন্দা জানানো ও জবাব চাওয়া না হয়, কটূক্তিকারীদের যদি বিচার করা না হয়, তাহলে আগামী ১৬ জুন ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি দেয়া হবে।
বর্তমান সরকারকে মোদি সরকার রক্ষা করতে পারবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতার আশায়-নেশায় আপনারা নিন্দা প্রস্তাব সংসদে আনলেন না। মনে রাখবেন মোদি সরকার আপনাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পারবে না, রক্ষা করতে পারবে না। মোদি আপনাদের কামান, বুলেট, যুদ্ধ বিমান দিয়েও রক্ষা করতে পারবে না, কারণ জনগণ ক্ষেপলে কোনো কিছু দিয়েই ক্ষমতা টেকানো যাবে না। জনগণ জাগ্রত হলে কোনো পরাশক্তির শক্তি কাজে আসে না।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্যে বলেন, সংসদ চলছে, আপনি রাষ্ট্রদূতকে ডাকেন, নিন্দা প্রস্তাব পাস করেন। জবাব চান। যদি আপনি ব্যর্থ হন তাহলে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে আপনাকে সংসদ থেকে টেনে নামানোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।
সমাবেশ থেকে নেতারা বলেন, হযরত মুহাম্মদকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য চলতি সংসদ অধিবেশনে নিন্দা প্রস্তাব আনতে হবে। এসময় ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও করারও হুমকি দেন ইসলামী আন্দোলনের নেতারা। সমাবেশ শেষে বিকেলে ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে বায়তুল মোকাররম থেকে পল্টন মোড় হয়ে একটি মিছিল রাজধানীর নাইটঙ্গেল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আজকের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অনুমতি নেয়নি বলে জানান মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার ডিসি মো. আ. আহাদ। তিনি বলেন, এ ধরনের বিক্ষোভ মিছিলের নামে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, কেউ যেন বিশৃংখলা করতে না পারে সেজন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থায় ছিল।
Discussion about this post