কয়েক দিনের অতিরিক্ত গরমে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। রেকর্ড গরমে জ্বর, সর্দি, কাশি ডায়রিয়াসহ ছড়াচ্ছে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ। এখানকার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালেই বাড়ছে রোগী। অসহনীয় তাপদাহে পানি শূন্যতায় আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। চিকিৎসকেরা বলছে, অতিরিক্ত গরমের কারনে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে রোগীরা। প্রতিদিন ৬০-৭০ অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে হচ্ছে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি ও তরল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। রোগীদের দেখা শুনা ও সার্বিক তদারকি করছেন দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা।চিকিৎসকরা বলছেন, গরমে কাশি, সর্দির সঙ্গে কারও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় হিট স্ট্রোক, ব্রংকিওলাইটিস হতে পারে। শিশুদের নিউমোনিয়াও হতে পারে। গরমে ডাবের পানি ও ওরস্যালাইন বেশ কাজে দেয়। হালকা রঙের সুতি জামাকাপড় পরা, বাইরে থেকে ঘরে ফিরে শরীর বাতাসে জুড়িয়ে নিয়ে গোসল করা প্রয়োজন।সরেজমিনে দেখা যায়, রবিবার সকালে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্তত পক্ষে ৬০ থেকে ৬৫ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে রবিবার (৭ মে) হাসপাতালে ২৪ জনই ছিল ডায়রিয়া রোগী। প্রতিদিন আবাসিক মেডিকেল অফিসার এর নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক টিম প্রতিটা রোগীকে চিকিৎসা দিতে দেখা গেছে।উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন থেকে ডায়রিয়া গুরত্বর আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন রাখী আক্তার(১৫)হাসপাতালে সীট না থাকায় তাকে ফ্লোরে রেখে চিকিৎসা দেন দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা। গত ২৪ ঘন্টায় তাকে প্রায় ১৪টি স্যালাইন দিতে হয়েছে। স্যালাইন দেওয়ার পরে তিনি সুস্থ হওয়ায় চিকিৎসকদের প্রশংসা করেন তার পরিবারের সদস্যারা। তারা বলেন,আমরা ঠিক সময়ে চিকিৎসকদের সেবা পাওয়ার কারনে রোগীকে সুস্থ করতে পেরেছি।গত কয়েক দিন ধরে তীব্র তাপদাহে ডায়রিয়ার রোগী ভীড় করছে হাসপাতালে। চিকিৎকেরা জানান, রোগীরা ডায়রিয়া শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং হাঁটা-চলার শক্তি প্রায় হারিয়ে ফেলছে। যদিও এখন পর্যন্ত এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু খবর পাওয়া যায়নি।গত এক সপ্তাহ ধরে গরমে ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়াজনিত জটিলতার রোগী বেশি আসছে। এ ছাড়া ডায়রিয়া, মাথাব্যথা, পানিশূন্যতা, শ্রমজীবীদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগী বেশি। তিনি আরও বলেন, বাইরে কাজ করতে গিয়ে কারও হঠাৎ বমি হলে দ্রুত প্রেশার বেড়ে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া রোগীরাও আসছেন। এদের মধ্যে যাদের অবস্থা গুরুতর, তাদের দ্রুত ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। আর যাদের অবস্থা গুরুতর নয়, তাদের চিকিৎসা ও পরামর্শ দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।এ বিষয়ে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সোহানিয়া আক্তার বিল্লাহ বলেন, গত কয়েকদিন থেকে প্রচণ্ড গরম পড়ছে। সেই সঙ্গে ভাজাপোড়াসহ মোখরোচক খাবার খাওয়ার জন্যই ডায়রিয়া ও অন্যান্য রোগীর চাপ বেড়েছে। ভাজাপোড়া না খাওয়া, হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করা ও প্রচুর পানি পানের পরামর্শ দেন তিনি।
Discussion about this post