সাম্প্রতিক সময়ে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাপকহারে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ অভিযানে কেএনএফ এর নিজস্ব আস্তানা দখল করা হয়েছে এবং সশস্ত্র ও জঙ্গি কার্যক্রমে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে। সেনা অভিযানে কেএনএফ এর সদস্যরা পলায়ন করে রোয়াংছড়ি সাব জোনের আওতাধীন পাইক্ষ্যং পাড়া এবং রুমা জোনের আওতাধীন রনিপাড়া এলাকায় অবস্থান গ্রহণ করেছে। আর্থিক সংকট ও খাদ্য ঘাটতির কারণে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে তারা বিভিন্ন পাড়ায় অবস্থায় গ্রহণ করেছে।
পরাস্থ এ সশস্ত্র দলটি নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও জঙ্গিবাদকে জাগ্রত করা সহ বিভিন্ন পাড়ার সাধারণ জনগণকে একত্রিত করার মাধ্যম হিসেবে বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয় গুলোকে বেছে নিয়েছে। বম সম্প্রদায় মূলত খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী এবং তারা চার্চ/গির্জায় গিয়ে উপাসনা করে থাকে। বিচ্ছিন্নতাবাদী এই দলটির কিছু সংখ্যক সদস্য বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে গিয়ে সাধারণ মানুষকে মিথ্যা আশ্বাস ও ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা প্রদানের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে দলটিকে নতুনভাবে পুনর্জীবিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের পাশাপাশি জঙ্গি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ও পরিচালনা করে যাচ্ছে।
খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীরা সপ্তাহের রবিবারকে পবিত্র দিন এবং উপাসনা করার সর্বোৎকৃষ্ট দিন হিসেবে মান্য করায় সর্বাধিক এই দিনটিকেই তারা নিজেদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রচারনা চালানোর জন্য বেছে নিয়েছে। গোয়েন্দ তথ্য মতে, এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ জুন (রবিবার) কেএনএফ সশস্ত্র সংগঠনটি নিজেদের সশস্ত্র ও জঙ্গি কার্যক্রমকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে সুয়ানলো পাড়া এবং অবিচলিত পাড়ায় আগমন করেছে বলে জানা যায়। এ প্রেক্ষিতে রোয়াংছড়ি সাব জোন হতে টহল পরিচালনার মাধ্যমে পাড়া দুইটির মধ্যবর্তী উপাসনালয় গুলোতে কঠোর নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়েছে। ধর্মীয় উপসনা শেষে ফেরার পথে সন্দেহভাজন কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের নিমিত্তে আটক করা হয়েছে এবং তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতীয়মান হয় যে, কেএনএফ সশস্ত্র সংগঠনের সাথে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
Discussion about this post