রেজি তথ্য

আজ: শুক্রবার, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ১লা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লায় চুরির অপবাদে গাছে বেঁধে তুলে ফেলা হয় নখ, পানি চেয়েও পাননি শ্রমিক

মোঃ আনোয়ার হোসাইন, কুমিল্লা :
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় যন্ত্রপাতি চুরির অপবাদ দিয়ে এক নির্মাণ শ্রমিককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, কয়েকজন মিলে ওই শ্রমিককে গাছের সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছে। এ সময় ওই শ্রমিক পানি পানি বলে চিৎকার করলেও কেউ পাশে আসেনি।
নির্যাতনের শিকার ওই শ্রমিক জানিয়েছেন, নির্যাতনের পর প্লাস দিয়ে তার বাঁ হাতের কনিষ্ঠ আঙুলের নখ তুলে ফেলা হয়েছে।
এ ছাড়া আরো কয়েকটি আঙুলের নখ তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।
আহত ওই নির্মাণ শ্রমিক চার দিন ধরে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে নির্যাতনকারীরা এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বারপাড়া এলাকায় ময়নামতি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পাশে ঘটনাটি ঘটে।
নির্যাতনের শিকার শ্রমিক বারপাড়া এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে আল আমিন (৩২)। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী আল আমিন। ওই রাত থেকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বারপাড়া এলাকার সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে আশিক ও হাফিজের নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের কাজ করার জন্য আল আমিনকে নিয়ে গেলে পারিশ্রমিক ৬০০ টাকার বদলে ৫০০ টাকা দেন।
এ সময় ৬০০ টাকা দিতে বললে আশিক ক্ষিপ্ত হন। পরে আল আমিন চলে গেলে আশিকের বাড়িতে কাজ করতে আবার আল আমিনের কাছে যাওয়া হলে তিনি না করে দেন। পরে ৬০০ টাকা করে বেবেন বলে বাড়িতে নেওয়া হয়। বাড়িতে নেওয়ার পর নির্মাণ যন্ত্রপাতি চুরির অপবাদ দিয়ে গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে তাকে নির্যাতন শুরু হয়। এক পর্যায়ে আশিকের নেতৃত্বে সজল, নয়নসহ ওই এলাকার কয়েকজন মিলে এসএস পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তিনটি আঙুল থেঁতলে দেওয়া হয়।
এ সময় হাফিজের হাতে থাকা লোহার প্লাস দিয়ে হাতের আঙুলের নখ তুলে ফেলে জোর করে চুরির স্বীকারোক্তি নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। ভুক্তভোগী আল আমিন বলেন, ‘হাসপাতালে আসার পর থেকে হুমকি দিচ্ছে, তারা আমাকে ও আমার পরিবারকে ভাড়া করা সন্ত্রাসী দিয়ে নাকি খুন করে গুম করে ফেলবে। আমি প্রশাসনের কাছে আমার নিরাপত্তা চেয়ে তাদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
ভিডিও ভাইরাল ও থানায় অভিযোগ হলে নির্যাতনকারীরা এলাকা থেকে গা ঢাকা দেয়ায়। এ জন্য তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহাম্মদ সঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ভিডিও দেখে আসামিদের চিহ্নিত করে আটকের জন্য চেষ্টা চলছে। তবে তারা এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on pinterest
Pinterest
Share on reddit
Reddit

Discussion about this post

এই সম্পর্কীত আরও সংবাদ পড়ুন

আজকের সর্বশেষ

ফেসবুকে আমরা

সংবাদ আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১