সাধারণ উপজাতিদের পাশে দাঁড়ানোর সময় নেই উপজাতীয় নেতাদের। তারা নিজেদের আখের গুছানো নিয়ে ব্যস্হ সময় পার করছেন। বর্তমান সময়ে যারা তিন পার্বত্য চট্টগ্রামের সাধারণ উপজাতিদের নেতা হিসেবে দাবি করছে এবং বিভক্ত দলগুলোর পক্ষে বিপক্ষে নেতা হিসেবেও যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা আদোও কি পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সাধারণ উপজাতিদের জন্য আন্দোলন করছে নাকি নিজের আখের গুছানো গুছিয়ে ফায়দা লুটে বিদেশে বাড়িঘর বানাচ্ছে।
যেমন ধরেন সাধারণ জনগণ (উপজাতি) নেতা হিসেবে
চাকমা সার্কেল প্রধান ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় আছে, বিভক্ত দলগুলোর মধ্যে জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা – পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জে এস এস) , প্রসিতখীসা – ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউ পি ডি এফ), নাথান বোম- ন্যাশনাল কুকি চীন ফ্রন্ট (কে এন এফ), এবং ঊষাতন তালুকদার, গৌতম দেওয়ান সহ সকল পাহাড়ি এই দলগুলোর নেতৃবৃন্দ জাতির অধিকারের সাইনবোর্ড বিক্রি করে হাজার হাজার কোটি টাকা চাঁদাবাজি করতে পারে কিন্তু সমাজের অবহেলিত রাস্তায় রাত কাটানো উপজাতি মানুষগুলোর দায়িত্ব নিতে পারে না, এবং কতটুকু দায়িত্ব নিয়েছে তা খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে থালের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। একটা ছবি দেওয়া হলো এই ছবির আলোকে দেখা যাচ্ছে পাহাড়ের উপজাতি সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ নিত্যপণ্য বাজারে বিক্রি করতে আসে ক্লান্ত হয়ে পড়লেই রাস্তায় ঘুমিয়ে পরে, আর এই ঘুমানোর করুণ চিত্র দেখলেই মনে হবে উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ গুলো অসহায়, গরীব এবং রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সু্বিধা থেকে বঞ্চিত। (সাম্প্রতিক সময়ে নেট দুনিয়াতে এমন একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে) আসলে কী তাই? বাস্তবতার নিরিখে বলতে গেলে হয়তো অনেকেই বিশ্বাস করতে চাইবে না। কারণ পার্বত্য চট্টগ্রামে গেলে পাহাড়ে পাদদেশে বসবাস করা পাহাড়ী উপজাতিদের ঘর-বাড়ি এবং পোশাক ও খাদ্যাভাস বলে দেয় তারা পিছিয়ে পড়া এবং সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
কিন্তু এই দেখা চিত্র কি আসলেই সত্য? সত্য না। তার পেছনের কারণ সম্পূর্ণ আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি যা আমাদের ধরাছোঁয়ার বাহিরে। কারণ, পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারি উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করতে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায় পাহাড়ি উপজাতি আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো। এই সংগঠনগুলোর হোতা-কর্তা উপরে উল্লেখিত নেতৃবৃন্দ । পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ উন্নত হোক, জীবন মানে পরিবর্তন আসুক তা চায়না তারা। এখানে শিক্ষা প্রসারে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় এবং মৌলিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে হাসপাতাল তৈরি হোক তা চায়না বর্ণিত গোষ্ঠী।
পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি উপজাতিদের জনসংখ্যা সবমিলেয়ে ৮ লাখের বেশি নয়। সরকারি যে পরিমাণ সাহায্য-সহায়তা তাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় তা দিয়ে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জীবন মান পরিবর্তন হওয়ার কথা। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ীদের কল্যাণে কাজ করে- ১. পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়,
২. পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড,
৩. তিনটি পার্বত্য জেলা পরিষদ,
৪. পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ,
৫ আরও এনজিও, আইএনজি,
৬. জাতিসংঘের ইউএনডিপি মতো সংস্থা।
পাহাড়ীদের কল্যাণে যেখানে এতগুলো প্রতিষ্ঠান, দপ্তর ও সংস্থা কাজ করে সেখানে পাহাড়িরা পিছিয়ে থাকলে রাস্তায় ঘুমালে তার দায়ভার এসে পড়ে সরকারের ওপর । এই দায়ভার অবশ্যই উপরোক্ত নেতৃবৃন্দ কারণেই ঘটে থাকে। কারণ তারা পাহাড়ীদের নামে আসা সবধরনের সুযোগ-সুবিধা বন্দুকের নল দেখিয়ে কেড়ে নেয়।
বছরের পর বছর ধরে পাহাড়ীদের অধিকারের কথা বলে গণচাঁদা, এককালীন চাঁদা সহ ২১ ধরনের চাঁদা পাহাড়ি এবং বাঙ্গালীদের থেকে তুলে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনিই খেলে। পাহাড়ী সমাজ আজ জেনে গেছে সন্তু লারমা জেএসএস এবং প্রসিত বিকাশ খীসার ইউপিডিএফ এর ভাঁওতাবাজি। তারা সেনাবাহিনী এবং বাঙ্গালীর বিরোধিতা করে চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি করার একটি নির্বিঘ্ন পরিবেশে তৈরি করার অংশ হিসেবে।
চাঁদাবাজির টাকা দিয়ে তারা দেশ-বিদেশে বিলাসবহুল জীবনযাপন করলেও সাধারণ পাহাড়িরা বলি হচ্ছে। তাদের রক্ত ও ঘামের টাকায় কেনা অস্ত্র আজ চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহারিত হচ্ছে। একটি ডিম বিক্রি করার টাকা থেকে পর্যন্ত চাঁদা দেয়া হচ্ছে। সন্তু লারমারা আজ পাহাড়ে উন্নয়ন হলে তার বিরোধিতা করে এবং সরকারি বরাদ্দের ১০% চাঁদা নেয়। যার কারণে পাহাড়ে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে না এবং পাহাড়ের মৌসুমের ফলমূল ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না।
আজকে পাহাড়ীরা নারী-পুরুষ রাত্রে রাস্তায় ঘুমাচ্ছে। এদের খবর কেন সন্তু লারমা ও প্রসিত নিচ্ছে না? বলাবাহুল্য যে, সন্তু লারমা ও প্রসিত যদি সত্যি সত্যিই পাহাড়ীদের অধিকার আদায়ে কাজ করতো অবশ্যই এই পাহাড়ী নারী-পুরুষের ঘুমানোর স্থান রাস্তায় হতো না।এই শ্রমজীবী, নির্যাতিত, নিপীড়িত,হতদরিদ্র সহজ সরল চাকমারা তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারে বিক্রি করার জন্য বাজারে একটু ভালো জায়গা পাওয়া বা পজিশনাল বিক্রির স্থানে রাত অবধি এভাবে ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিচ্ছে।যাতে করে সকালে উঠে ওই জায়গাটি বেহাত না হয়।কেননা চাঁদার কারণে ওই স্থানটি আবার বিক্রি হয়ে যেতে পারে।এরকম নির্মম পরিস্থিতি আর কতদিন চলবে।কতদিন এই সমস্ত দেশদ্রোহীদের জনগণের কাঠগড়ায় বিশ্বাসঘাতকতার বিচার হবে।প্রশ্ন রইল আপনাদের কাছেই…..।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
Discussion about this post