মো: আনোয়ার হোসাইন, কুমিল্লা:
দেবীদ্বারে সম্প্রতি সংখ্যালঘুর উপর হামলা মারধরের ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের জেরধরে উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদুল আলম কর্তৃক সাংবাদিক শফিউল আলম রাজীবের উপর হামলা মারধর ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে ভাংচুর করার অভিযোগ উঠেছে। সাংবাদিক শফিউল আলম রাজীব দেবিদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক ভোরের সূর্যদয়ের প্রতিনিধি। ঘটনার পর সন্ধ্যায় দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবের জরুরী সভায় এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানানো হয়।
জানা যায়, মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় দেবীদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের সরকারি বাসভবনে (গোমতী) সংবাদ সংগ্রহে গেলে ৮নং জাফরগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল আলমের সমর্থক বিল্লাল গাজী, আফসান রুবেলসহ আরো তিন চারজন প্রথমে গালমন্দ ও পরে হামলা চালিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে এবং মাথায় আঘাত করে। ওই সময় সাংবাদিক রাজীব আশ্রয় ও ঘটনাটি জানাতে উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারি বাসভবনে ঢুকে বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানাতে গেলে ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল আলম পুনরায় সাংবাদিক রাজীবকে মারধর করে এবং মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে ভাংচুর করে নিয়ে যায়। ঘটনার পর তাৎক্ষনিক বিষয়টি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, ইউএনও নিগার সুলতানাকে অবহীত করা হয়।
ঘটনার পর সন্ধ্যায় পোনে ৭টায় দেবীদ্বার উপজেলা প্রেসক্লাবের জরুরী এক সভায় ওই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদসহ হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানানো হয়।
হামলায় আহত সাংবাদিক শফিউল আলম রাজীব জানান, বিএনপির ৭২ ঘন্টা অবরোধ চলাকালে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় কুমিল্লা (উঃ) জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে একটি অবরোধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল হয়। তখন আমি উপজেলা চেয়ারম্যানের বক্তব্য আনতে সরকারি বাসভবন (গোমতী) ঢুকার সময় জাহিদ চেয়ারম্যানের ৪ সমর্থক প্রথমে গালমন্দ ও শরীরের বিভিন্ন অংশে এবং মাথায় আঘাত করে, আমি ওখান থেকে চেয়ারম্যানের বাসায় ঢুকে বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানাতে গেলে জাহিদ চেয়ারম্যান আমাকে বলে তুই রাজীব, সংখ্যালঘুর উপর হামলা করেছি বলে রিপোর্ট করেছিস, এই বলে আমাকে গালমন্দ ও পুনরায় হামলা এবং মারধর করতে থাকে। এসময় তার মারধর এবং গালমন্দের ঘটনা রেকর্ড করতে মোবাইল ফোনটি পকেট থেকে বের করলে জাহিদ চেয়ারম্যান মোবাইলটি ছিনিয়ে নিয়ে ভাংচুর করে নিয়ে যায়।
হামলার বিষয়ে জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদুল আলম বলেন, সাংবাদিকের উপরে কোন প্রকার হামলা বা মোবাইল ভাংচুরের ঘটনা ঘটেনি। তবে সাংবাদিক রাজীবের সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়েছে, যা আমার ঠিক হয়নি। বিষয়টি দ্রুত মিমাংসা করার জন্য গুনাইঘর উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান মোকবল হোসেন মুকুলকে দায়িত্ব দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান।
এ ব্যাপারে দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, বিষয়টি মিমাংসার জন্য সুলতানপুর ও গুনাইঘর ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
রাত পৌনে ৯টায় এ ব্যপারে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর জানান, ঘটনাটি শুনেছি, তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।০
Discussion about this post