রেজি তথ্য

আজ: শুক্রবার, ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ৮ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

চিটাগাং চেম্বারের উদ্যোগে এফবিসিসিআই সভাপতির সংবর্ধনা ও মতবিনিময়

অনুজ দেব:

চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র উদ্যোগে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে গত সোমবার (২১ মার্চ) সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে দি ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি (এফবিসিসিআই)’র সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিনের সংবর্ধনা ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় এফবিসিসিআই’র সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী উল্লেখ করে বলেন, চট্টগ্রামে বাস্তবায়নাধীন মেগা প্রকল্পগুলোর কারণে উন্নয়ন চোখে পড়ার মত। বিগত ২ বছর কোভিড চলাকালীন এবং বর্তমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চাহিদা ও পণ্যের দাম বৃদ্ধি, সম্পূর্ণ সাপ্লাই চেইন এবং ক্যাপাসিটি কমে গেছে মন্তব্য করে সরকারের নীতি নির্ধারণের চাহিদা ও যোগানের মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয়সাধনপূর্বক বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনাসমূহ গ্রহণ করা উচিত। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি পেলে দেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতাও বৃদ্ধি পেত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন মধ্যম আয়ের দেশ এবং উন্নত রাষ্ট্রে বাংলাদেশকে রূপান্তর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন আনুষাঙ্গিক ইউটিলিটিজ নিয়ে ব্যবসায়ী সমাজকে সোচ্চার হতে হবে। শুধু উন্নয়ন নয়, টেকসই উন্নয়নের জন্য সকলের এক সাথে কাজ করা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, রাজস্ব প্রদান ইতিবাচক। ব্যবসার পরিসর বৃদ্ধি পাওয়া মানে রাজস্ব বৃদ্ধি পাওয়া। বর্তমানে যারা আয়কর দিচ্ছে শুধুমাত্র তাদের উপর না চাপিয়ে করের আওতা বাড়ানো দরকার। গ্রামীণ অর্থনীতি বর্তমানে অনেক শক্তিশালী। তাই উপজেলা পর্যায়েও রাজস্ব আহরণ করা যেতে পারে। তিনি বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন সমস্যাবলী সরকারের উচ্চ পর্যায়ে অবহিতপূর্বক দ্রুত সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন।
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, করোনা মহামারীতে সরকার প্রদত্ত প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা যাতে এসএমই খাত পায় সেই লক্ষ্যে এফবিসিসিআই সভাপতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং ব্যবসায়ীদের সুবিধা ও অসুবিধা অনুধাবনপূর্বক সরকারের সাথে নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে কাজ করে থাকেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামকে সত্যিকার অর্থে বাণিজ্যিক রাজধানী করার ঘোষণা দিয়েছেন। তাই চট্টগ্রামকে ঘিরে যেসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে তা সময়মত সম্পন্ন করা হলে আগামী ৫-১০ বছরের মধ্যে এই অঞ্চলে যুগান্তরকারী পরিবর্তন হবে যা এসডিজি অর্জন ও ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে সহায়ক হবে। তবে এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সরকারের দপ্তরসমূহের আরো বেশী ক্ষমতায়ন প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, বেশীর ভাগ চেম্বারেরই আর্থিক সঙ্গতি নেই। তাই চেম্বারসমূহকে করের আওতামুক্ত রাখা উচিত। চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কের মাধ্যমে ১৩ টনের বেশি মালামাল বহনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অথচ চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমেই দেশের সিংহভাগ আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সম্পন্ন হয় এবং চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে পণ্য পরিবহন করা হয়। তিনি ব্যবসায়ীদের এসব সমস্যা সমাধানে সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য এফবিসিসিআই সভাপতিকে বিশেষ অনুরোধ জানান।
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম’র সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, পরিচালকদ্বয় এ. কে. এম. আক্তার হোসেন ও মোঃ রকিবুর রহমান (টুটুল), চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, প্রাক্তন পরিচালকদ্বয় মাহফুজুল হক শাহ ও এস. এম. আবু তৈয়ব, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি খলিলুর রহমান, চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বার সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী, বিজিএমইএ’র ১ম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, বিএসআরএম গ্রুপ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীর আলী হুসেইন, বি.এস.এম. গ্রুপ চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী ও জিপিএইচ ইস্পাতের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমাস শিমুল। সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চেম্বারের প্রাক্তন সিনিয়র সহ-সভাপতি ও এফবিসিসিআই পরিচালক মোঃ নুরুন নেওয়াজ সেলিম, চেম্বার পরিচালকবৃন্দের মধ্যে মোঃ অহীদ সিরাজ চৌধুরী, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী, অঞ্জন শেখর দাশ, বেনাজির চৌধুরী, চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও এফবিসিসিআই’র পরিচালক ডাঃ মুনাল মাহবুব, এফবিসিসিআই পরিচালকবৃন্দ ইকবাল হোসেন চৌধুরী, মোঃ শাহাবুদ্দিন ও ড. যশোদা জীবন দেবনাথসহ বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
অন্যান্য বক্তারা কাঁচামাল ও ফিনিশড প্রোডাক্ট আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কের যৌক্তিক পার্থক্য নিশ্চিত করা, লোকাল এলসি’র ক্ষেত্রে উৎসে কর প্রত্যাহার, আগামী ৬ মাসে সম্ভাব্য ভোগ্যপণ্যের চাহিদা প্রাক্কলন করে আমদানি, চাহিদা, যোগান ইত্যাদির মধ্যে সমন্বয় করা, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি না করা, ডলারের উচ্চ মূল্য নিয়ন্ত্রণ, অগ্রিম কর ফেরৎ প্রদান, ইকোনমিক জোনে ভূমির উপর ভ্যাট প্রত্যাহার করা, বাংলাদেশ ব্যাংক হতে ব্যাংকগুলোকে এলসি খোলার ব্যাপারে সহায়তা প্রদান, বে-টার্মিনাল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন, চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়ক সম্প্রসারণ, নৌ-বন্দর সৃষ্টির মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ নৌপথে পণ্য পরিবহন বৃদ্ধি, ঢাকার পরিবর্তে চট্টগ্রাম থেকে কোয়ারেন্টাইন আইপি নবায়ন ইত্যাদি বিষয়ে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সরকারের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে এফবিসিসিআই সভাপতির প্রতি আহবান জানান।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on pinterest
Pinterest
Share on reddit
Reddit

Discussion about this post

এই সম্পর্কীত আরও সংবাদ পড়ুন

আজকের সর্বশেষ

ফেসবুকে আমরা

সংবাদ আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১