কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃ স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করেছে সনাতনী লোকজন। এদের মধ্যে সিংহভাগ ছিলেন মহিলা। এতে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকশত লোক অংশ নেন।ভূমি দস্যুতার অভিযোগে বাজারের কেন্দ্রীয় কালী বাড়ি প্রাঙ্গণ থেকে সোমবার সকালে এ মিছিলটি শুরু হয়। যা তরকারি বাজার সড়ক ও হাই স্কুল গেট অতিক্রম করে বাজারের হোটেল নিউ স্টারের সামনে শাপলা চত্বরে এসে মানববন্ধনে মিলিত হয়।
এতে উক্ত ব্যবসায়ীর নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন নির্যাতিত পরিবার গুলোর পক্ষে মৃদুল কান্তি দে, তার স্ত্রী গীতা রানী দে, পুত্র ফিলিপ কান্তি দে, ভাই দয়াল কান্তি দে, বোন সন্ধ্যা রানী দে ও কুনকুন রানি দে।
বক্তারা স্লোগানে বলেন, অসহায় হিন্দুর জায়গা দখল মানি না মানবো না, টাকার জোর চলবে না, ভূমি দস্যুর শাস্তি চাই, দালালমুক্ত সমাজ চাই, প্রশাসন নীরব কেন? প্রভৃতি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ঈদগাঁও বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী মৃণাল আচার্য্য কয়েকদিন আগে বাজারের স্বর্ণপট্টি এলাকার এক শতক জমি দখল করে নেয়।
মৃণাল আচার্য্যর নিজ বাড়ি ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হরিপুর গ্রামে।তবে বর্তমানে তিনি মরিচ বাজারের নিজ বাসভবনে সপরিবারে বসবাস করে আসছেন।বক্তারা এ জমি হিন্দু সম্প্রদায়ের জনৈক দয়াল কান্তি দে-র বলে দাবি করেন।একই বিষয়ে এর কয়েকদিন আগে ঈদগাঁও কেন্দ্রীয় কালী বাড়ি অফিসে এ ব্যবসায়ীর দখলবাজি ও ভূমিধস্যতার বিষয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেছিলেন।এদিকে এ জমি নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত হলে কেন্দ্রীয় কালী মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি উত্তম রায় পুলকের উপস্থিতিতে একটি সামাজিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত মৃণাল আচার্য্যর বিপক্ষে যায়। এতে মৃণাল আচার্য্য ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
এর কয়েকদিন পর ঈদগাঁও বাজার স্বর্ণপট্টির একটি স্বর্ণের দোকানে অনুরূপ সামাজিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে উত্তম রায় পুলকের প্রতি ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটান মৃণাল আচার্য্যরা।
সংগঠিত হুমকি- ধমকির প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী পুলক রায় ঈদগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি লিপিবদ্ধ করেন।যা বর্তমানে পুলিশ উপ-পরিদর্শক নোমানের তদন্তাধীন রয়েছে। জিডি নম্বর- ২৭১।
এতে তিনি ব্যবসায়ী মৃণালের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য লোকজনের সম্মুখে তাকে অপহরণ পূর্বক লাশ গুম করবে বলে হুমকি দেয়ার অভিযোগ আনেন।
জিডিতে ব্যবসায়ী পুলক যেকোনো সময় তার ও তার ব্যবসার চরম ক্ষতি হতে পারে বলে উল্লেখ করেন।
সাধারণ ডায়েরিতে মৃণাল আচার্য্য, অশোক আচার্য্য, বিপুল আচার্য্য ও মনিষ আচার্য্যকে বিবাদী করা হয়েছে।
এদিকে ব্যবসায়ী মৃণাল আচার্য্যও উত্তম রায় পুলকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে ঈদগাঁও থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।সংগঠিত ঘটনার বিষয়ে এ প্রতিবেদক মোবাইলে মৃণাল আচার্য্যের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি এ সংক্রান্ত ঘটনায় কক্সবাজার অবস্থান করছেন বলে জানান।অভিযুক্ত মৃণাল ঈদগাঁও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নির্বাচিত সভাপতি।অন্যদিকে উত্তম রায় পুলক বাজারের প্রাচীনতম খাদ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ‘হোটেল পুবাণি’র স্বত্বাধিকারী।
Discussion about this post