চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। স্বাধীনতা উত্তর দুর্ভিক্ষ পীড়িত জনগণ যখন হতাশা আর অনিশ্চয়তায় নিমজ্জিত ঠিক তখনি শহীদ জিয়ার আবির্ভাব ঘটেছিল ধুমকেতুর মত। তিনি ছিলেন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা। দেশের সংকটময় মুহূর্তে ত্রাণ কর্তা হিসেবে তিনি বার বার দেশকে মুক্ত করেছেন। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন আবার অস্ত্রহাতে যুদ্ধও করেছেন। স্বাধীনতা
যুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা ইতিহাসের অংশ। তিনি ছিলেন জেড ফোর্সের অধিনায়ক ও দুটি সেক্টরের কমান্ডার। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শহীদ জিয়ার অবদান এদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে। বহুদলীয় গণতন্ত্রের যে যাত্রা তিনি শুরু করেছিলেন সেটিকে আজকে বিনষ্ট করে গণতন্ত্রের নামে কর্তৃত্ববাদী অপশাসন চালু করা হয়েছে। নজিরবিহীন জালিয়াতির ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনকে নির্বাসিত করে জনগণকে ক্ষমতাহীন করা হয়েছে। তাই স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা ও গণতন্ত্রের পুনর্জীবন ঘটাতে
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক শক্তির এ মুহূর্তে গড়ে তুলতে হবে ইস্পাত কঠিন ঐক্য।
তিনি শুক্রবার (১৯ জানুয়ারী) বিকালে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের মাঠে বিএনপির প্রতিষ্টাতা জিয়াউর রহমানের ৮৮ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আলোচনা সভা ও এতিমদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণকালে এসব কথা বলেন।
মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মো. কামরুল ইসলামের পরিচালনায় আলোচনায় অংশ নেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, মহানগর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রথম বিদ্রোহ চট্টগ্রাম থেকেই হয়েছে। তাই চট্টগ্রামের ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধপূর্ব এবং যুদ্ধকালীন সময়ে অবিস্মরনীয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে নীরব ছিলেন না। এদেশের সেনাবাহিনীকে সংগঠিত করে তিনি পাক সেনাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করেছেন চট্টগ্রাম থেকেই। তিনি স্বাধীনতার পরের সরকারের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে দেশকে বের করে নিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। রাষ্ট্র পরিচালনায় তার দক্ষতা ও দূরদর্শিতার কারণে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা ফেলে স্বনির্ভর বাংলাদেশের পথে,
পথ চলতে শুরু করে। শহীদ জিয়া আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কর্মকান্ড শুরু করেন। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ আজ মাথা উঁচু করে দাড়াতে শিখেছে।
এ এম নাজিম উদ্দীন বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা। তাঁর শাসনামল ছিল বাংলাদেশের স্বর্ণযুগ। কৃষি থেকে শুরু করে রেমিটেন্সসহ অর্থনীতির চাকা সচল হয়েছিল জিয়াউর রহমানের হাত ধরে। মহান মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন সেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে বাংলাদেশকে উন্নত ও আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলেছেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান একনায়কতন্ত্র তথা বাকশাল বিলুপ্ত করে বহুদলীয় ক্ষমতায়নের প্রবর্তন করেছেন। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ৫টি মৌলিক ইস্যুকে ধংস করে দিয়েছে। বিএনপি তা ফিরিয়ে দিয়ে জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। দেশ পরিচালনায় আওয়ামী লীগ যেখানে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি সেখানে সফল হয়েছে।
সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি বলেন, চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের একটি বড় স্তম্ভ। এই স্থানের গুরুত্ব দেশের মানুষের কাছে অনেক বেশি। কারণ শহীদ জিয়াউর রহমান এখান থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। কেউ চাইলেই এই ইতিহাস পরিবর্তন করতে পারবে না।
এতে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, আহবায়ক কমিটির সদস্য হারুন জামান, নিয়াজ মো. খান, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, আনোয়ার হোসেন লিপু, বিভাগীয় শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহার, কেন্দ্রীয় মহিলাদলের যুগ্ম সম্পাদক ফাতেমা বাদশা, মহানগর মহিলাদলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, থানা বিএনপির সভাপতি মন্জুর রহমান চৌধুরী, মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, থানা সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাকির হোসেন, মো. শাহাবুদ্দীন, হাজী বাদশা মিয়া, আবদুল কাদের জসিম, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, গিয়াস উদ্দিন ভূইয়া, মহানগর তাঁতী দলের আহবায়ক মনিরুজ্জামান টিটু, সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান মুরাদ, জাসাসের আহবায়ক এম এ মুছা বাবলু প্রমূখ।
Discussion about this post