যথাযোগ্য মর্যাদায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবস উদযাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) র্যালি, পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও আলোচনা সভার মধ্যে দিয়ে দিবসটি উদযাপন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের নেতৃত্বে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা। দিবসটি উপলক্ষ্যে এদিন সকাল ৮টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ প্রচার করা হয়। পরে ১১টায় মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের নেতৃত্বে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে শেষ হয়। পরে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন। প্রশাসনের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, কুবি শাখা ছাত্রলীগ, কর্মকর্তা এসোসিয়েশন ও কর্মচারী পরিষদ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রশাসনিক ভবনের ৪১১ নং কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্যে দিয়ে এদেশের স্বাধীনতার অধ্যায় শুরু হয়েছিল। তিনি এমন একজন নেতা, এদেশকে স্বাধীনতা এনে দেয়ার পরেও এদেশের মানুষের হাতে তাঁকে প্রাণ হারাতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর মত মহান নেতাকে যেকোন নামে অভিহিত করা যায় না। তিনি গণমানুষের জন্য আন্দোলন করেছেন, রাজনীতি করেছেন। আমাদের মধ্যে যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে তারা কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারেনা, কারণ আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকেই বাস্তবায়ন করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর যেমন কোন ব্যক্তিস্বার্থ ছিল না তেমনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পরেই আমি বলেছি আমার কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই। যোগদানের পর এখানে প্রত্যেকটি কাজ করেছি আইন মেনে, নিয়মের মধ্যে থেকে, এখানে কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া হয়নি। কেউ যদি কোন স্বার্থের জন্য কাজ করে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যাণের জন্য তাকে বাধা দিয়েছি। একটি শিক্ষার্থী-বান্ধব ও মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। সেই কারণে আজ বিশ্ববিদ্যালয়টি জাতীয় পর্যায়ে একটি স্থান অর্জন করেছে ও তার ইমেজ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে বিশ্ববিদ্যালযটি এখন আর নুতন নয়, তাই এটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। এজন্য একটি চ্যালেঞ্জিং ভিশন তৈরি করতে হয় এবং তা অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয় – এবং আমি তাই করছি। কিন্তু এখন যদি কেউ বলে আমরা এটা চাইনা, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় উপরে উঠবে কিভাবে? উন্নত মানের শিক্ষা, শিক্ষণ, গবেষণা, উদ্ভাবন যদি না হয় তাহলে কিভাবে আমরা লিডিং বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠব? বঙ্গবন্ধু বহু চালেঞ্জ মোকাবেলা করে এদেশকে স্বাধীন করেছিলেন, আমাদেরও প্রতিটি কাজের সফলতার পেছনে চ্যালেঞ্জ থাকে। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়কে লিডিং বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতেও অবিরাম চালেঞ্জ এর মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছি। আমি দেখেছি এখানকার সদস্যরাই নিজের বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে বাজে কথা বলে, ফেসবুকে লেখালেখি করে, এটি অন্য কোথাও আমি দেখি নাই। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বলে যদি আমরা ক্লাস না নেই, রাষ্ট্রের টাকা খরচ করে গাড়ির তেল পুড়িয়ে ঘুরে বেড়াই, তাহলে এখানে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কোথায়? শুধু কি মুখেমুখে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বলি? উপাচার্য আরও বলেন, আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা আপনাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে অযথা বদনাম করবেন না। সবাই নিজের সৎ আদর্শে থাকবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করবেন। বঙ্গবন্ধু যেমন বলেছিলেন আমাদের কেউ দাবায়া রাখতে পারবা না, আমরাও বলছি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নও কেউ দাবায়া রাখতে পারবে না।
Discussion about this post